পাবনার চাটমোহরের রাবেয়া-রোকেয়ার গৃহে প্রত্যাবর্তন আমাদের সবার জন্য মুক্তির প্রতীক
— প্রধান মন্ত্রী
পাবনার চাটমোহরের জোড়া মাথার শিশুসুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছে রাবেয়া-রোকেয়া।
আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ছাড়পত্র দিয়েছে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ), ঢাকা। গত রবিবার (১৪ মার্চ) এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষে সংযুক্ত মাথার যমজ বোন রাবেয়া ও রোকেয়াকে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করে তাদের সুস্থ শরীরে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া দেশবাসীর জন্য গর্বের।শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার মাসে ‘অপারেশন ফ্রিডম’র মাধ্যমে জোড়া মাথা থেকে মুক্তি পাওয়া রাবেয়া-রোকেয়ার গৃহে প্রত্যাবর্তন আমাদের সবার জন্য মুক্তির প্রতীক।
এই সফল অস্ত্রোপচার শুধু বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতিই নির্দেশ করে না বরং এটি জনগণের প্রতি গণতান্ত্রিক সরকারের দায়বদ্ধতারও বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত বছরের ১ আগস্ট সিএমএইচে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল টিম ৩৩ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যমজ শিশু রাবেয়া ও রোকেয়ার জোড়া লাগানো মাথা আলাদা করে।
মেডিকেল টিমে ছিলেন হাঙ্গেরির কয়েকজন চিকিৎসক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, সিআরপি ও শিশু হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সার্জন, চিকিৎসক এবং চিকিৎসা সহায়তাকারীরা। আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দুই শিশুর আজ ছাড়পত্র পেয়ে ঘরে ফেরার দিন।
ভবিষ্যতে রাবেয়া-রোকেয়া সিএমএইচসহ যেকোনো সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা নিতে পারে সে ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন। ইতোমধ্যে শিশু দুটির জন্য ‘আজীবন চিকিৎসাসেবা কার্ড’ দিয়েছে সিএমএইচ।অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, রাবেয়া-রোকেয়ার চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট সামরিক-বেসামরিক ও বিদেশি চিকিৎসক এবং শিশু দুটির পরিবারসহ বিভিন্ন পদবির সেনা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে রাবেয়া-রোকেয়ার ছাড়পত্র প্রদান করেন।উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনার চাটমোহরের আটলংকা গ্রামের শিক্ষক দম্পত্তি রফিকুল ইসলাম ও তাছলিমা বেগমের ঘরে জন্ম নেয় জোড়া মাথার যমজ শিশু। এমন জোড়া মাথার শিশুর বিযুক্তকরণ কার্যক্রমে সাফল্যের উদাহরণ খুবই কম। এ বিযুক্তিকরণ অপারেশন বিশ্বের ১৭তম সফল অপারেশন ও বাংলাদেশে প্রথম। এ ঘটনা বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি মাইলফলক।
Leave a Reply