তিউনিসিয়াতে লিবিয়ার রাজনৈতিক সংলাপ শুরু: একক সরকার গঠনের প্রত্যাশা।
তিউনিসিয়াতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আজ (০৯ নভেম্বর) থেকে লিবিয়ান পলিটিকাল ডায়ালগ ফোরাম (এলপিডিএফ) শুরু হয়েছে। তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাঈদ এই ফোরামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এই ফোরামে লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় ও পূর্বাঞ্চলীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিসহ মোট ৭৫ জন বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করছেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতিনিধি লিবিয়ার দীর্ঘদিনের বিভক্তি রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের জন্য এই ফোরামকে সর্বশেষ সুযোগ বলে অবহিত করেছেন।
লিবিয়ায় জাতিসংঘ মিশনের তথ্য মতে এই সংলাপের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচনের রোড়ম্যাপ নির্ধারণ করা এবং তা বাস্তবায়নের জন্য লিবিয়ায় একটি একক সরকার গঠন করা। এই সংলাপ হতে লিবিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল ভেঙ্গে তিনজনের নতুন কাউন্সিল গঠন করা হতে পারে। এছাড়াও এই কাউন্সিলের অধীনে স্বতন্ত্র একটি একক সরকার গঠন করা হতে পারে; যারা সমগ্র লিবিয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। ছয়দিন ব্যাপী এই সংলাপ সফল হলে ২০১৪ সাল থেকে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় ও পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার বিলুপ্ত হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।
গত জানুয়ারিতে জার্মানিতে লিবিয়ায় প্রভাব বিস্তারকারী দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতে বার্লিন কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাতিসংঘের অধীনে রাজনৈতিক, মিলিটারি ও অর্থনৈতিক ট্র্যাকে লিবিয়ার প্রতিপক্ষের মধ্যে সংলাপের সিদ্ধান্ত হয়। এই তিনটি ট্র্যাকের মধ্যে মিলিটারি ও অর্থনৈতিক সংলাপ ইতিমধ্যে অনেকটা সফল হয়েছে। বার্লিন কনফারেন্সে গঠিত যৌথ মিলিটারি কমিশনের (৫+৫) মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর লিবিয়ায় স্থায়ী যুদ্ধ বিরতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া এই কমিশন যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য প্রথমবারের মতো লিবিয়ার মাটিতে গাদামেস শহরে ২-৪ নভেম্বর বৈঠক করেছেন।
অন্যদিকে অর্থনৈতিক ট্র্যাকে সফল আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘ আট মাস লিবিয়া হতে তেল উৎপাদন ও রপ্তানি বন্ধ থাকার পর পুনরায় শুরু হয়েছে। লিবিয়ার ন্যাশনাল অয়েল কর্পোরেশনের সর্বশেষ তথ্যমতে লিবিয়ার তেল উৎপাদন দৈনিক এক মিলিয়ন ব্যারেল ছড়িয়ে গেছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে লিবিয়ার তেল উৎপাদন স্বাভাবিক হয়ে দৈনিক ১.২ মিলিয়ন ব্যারেলে উন্নীত হবে।
যদিও লিবিয়ার তেল রপ্তানি বৃদ্ধির প্রভাব অর্থনীতিতে এবং খোলাবাজারে মার্কিন ডলারের উপর এখনো পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। কারণ বর্তমানে তেল বিক্রির রাজস্ব লিবিয়ার ফরেন ব্যাংকে জমা হচ্ছে; যা লিবিয়ার চলমান প্রতিদ্বন্দ্বী কোন সরকারই ব্যবহার করতে পারছেনা। তবে তিউনিসিয়াতে চলমান সংলাপের মাধ্যমে নতুন একটি একক সরকার গঠিত হলে ধীরেধীরে অর্থনীতির উন্নতি হতে পারে এবং এক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের নতুন বিনিময় হারও নির্ধারণ করা হতে পারে।
লিবিয়া প্রবাসী কল্যাণ ফোরামের পক্ষ থেকে লিবিয়ান পলিটিকাল ডায়ালগ ফোরামের সফলতা কামনা করছি এবং এর মাধ্যমে লিবিয়ার সাধারণ জনগণ ও প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে আশা করছি।
#লিবিয়া প্রবাসি কল্যাণ
দৈনিক এটিএম নিউজ
Leave a Reply