“খাদিমনগরে তানভির হত্যা: আদালতে ২ আসামির আত্মসমর্পণ”
রিপোর্ট পলাশ দেবনাথ দৈনিক এটিএম নিউজ সিলেট
সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগরে তানভির আহমদ হত্যা মামলার দুই আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) তারা সিলেট শিশু আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।তারা দুইজন তানভির হত্যা মামলার ১ ও ২ নং আসামি। তারা হচ্ছেন- খাদিমনগর ইউনিয়নের ছালেহপুর গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে তোয়াহিদ (২০) ও তোফায়েল (২২)।আদালত সূত্র জানায়, খাদিমনগরে তানভির আহমদ হত্যা মামলার ১ ও ২ নং আসামি তোয়াহিদ (২০) এবং তোফায়েল (২২) বৃহস্পতিবার সিলেট শিশু আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক মো. মোহিতুল ইসলাম তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ প্রদান করেন। পরে তাদের ঢাকার টঙ্গীস্থ শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রেরণ করা হবে।উল্লেখ্য, গত ৩ সেপ্টেম্বর সিলেটের খাদিমনগরে ছুরিকাঘাতে খুন হন কিশোর তানভির। এ ঘটনায় পরবর্তীতে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা শফিক মিয়া।মামলায় ১ ও ২ নম্বর আসামি করা হয় সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগরের সালেহপুর গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে তোয়াহিদ (২০) এবং তোফায়েল (২২)।মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন- একই গ্রামের মৃত কনু মিয়ার ছেলে উসমান গণি (৪৭), শামসুল হক (৫৫), আব্দুল গণি (৫০), আফতাব উদ্দিন উরফে শামসুল হক ও তার ছেলে পিয়াস আহমদ (১৯) এবং মাসুক মিয়ার ছেলে পাপ্পু মিয়া (২৩)।আসামিদের মধ্যে আফতাব উদ্দিন উরফে শামসুল হক সিলেট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।মামলার বিবরণে উল্লেখ, আসামিরা এলাকার দাঙ্গাবাজ ও ভূমিখেঁকো। অন্যের ভূ-সম্পত্তি আত্মসাৎ করাই তাদের নেশা ও পেশা। মামলার বাদী নিহতের পিতা শফিক মিয়া নিজেকে একজন কৃষিজীবী উল্লেখ করে বলেন, আফতাব উদ্দিনের সঙ্গে তার সম্পত্তি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা চলমান থাকায় মনোমালিন্য চলে আসছিল। এরই জের ধরে ঘটনার দিন তানভিরের গতিবিধি লক্ষ্য করে উল্লেখিত আসামিরা সশস্ত্র অবস্থায় তাকে খুন করার উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়।এদিকে তানভির ঘটনার দিন বিকেলে স্থানীয় তুষার মিয়ার বাড়ি থেকে জ্বালানি কাঠ কেটে ভ্যানযোগে বাড়িতে এনে পুনরায় ভ্যানফেরত দেওয়ার জন্য বের হয়। ভ্যানটি ফেরত দিয়ে স্থানীয় লিটল লন্ডন মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করে সে। নামাজ পড়ে বাড়িতে ফেরার পথে আসামি আফতাব উদ্দিন চিৎকার করে বলে ‘তোমরা কে কোথায়? শালার বেটা যায়গি, তারে ধরে খুন করে ফেল।’আফতাবের এমন কথা শুনার পর আন্য আসামিরা এসে তানভিরকে ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে আফতাবের হুকুমে মামলার ১ নাম্বার আসামি তোয়াহিদ তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে তানভিরের মাথার মধ্যখানে আঘাত করলে সে মারাত্মক আহত হয়। অন্য আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে।আসামিরা তানভিরের মৃত্যু নিশ্চিতের জন্য শরীরে কিল ঘুষিও মারতে থাকে। এক পর্যায়ে তানভিরের চিৎকারে তার বাবা এগিয়ে আসলে তার দিকেও হামলাকারীরা মারমুখী হয়। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তানভিরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয় এবং ছয় ঘণ্টার পর সে মারা যায়।এদিকে, মামলা দায়েরের পর থেকেই আসামিরা পলাতক রয়েছে। এখন পর্যস্ত পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার আদালতে আত্মসমর্পণ করতে গেলে ১ ও ২নং আসামিকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন আদালত।
Leave a Reply